জরুরী মাসআলা
জিজ্ঞাসাঃ
গোসল করার পূর্বে আমরা যে উযু করি, গোসল করার পরে নামায পড়ার জন্য আবার নতুন উযু করতে হবে কি-না? প্রমাণসহ জানালে উপকৃত হব।জবাবঃ
গোসল করার পূর্বে উযু করা হোক বা না হোক, গোসল করার পরে নামায পড়ার জন্য আবার নতুন করে উযু করতে হবে না। গোসলের পূর্বের উযু বা শুধু গোসল দ্বারা নামায হয়ে যাবে। কেননা গোসলের মধ্যে উযুর অঙ্গ ধৌত হয়ে যায়। এ কারণে গোসলের পরে আবার নামাযের জন্য উযু করলে অপব্যয় হওয়ার কারণে মাকরূহ হবে। তবে উযু থাকা অবস্থায় আবার উযু করতে চাইলে, সেখানে মাসআলা হল- প্রথম উযু দ্বারা এমন কোন ইবাদত করবে যা উযু ব্যতীত করা যায় না। যেমন কমপক্ষে দু’রাকাআত নামায পড়া। অবশ্য যদি কেউ পবিত্রতার নিয়্যত ব্যতীত গোসল করে এবং পূর্বে উযু না করে তাহলে সে ক্ষেত্রে উযুর সওয়াব প্রাপ্তির জন্য পুনঃ উযু করা মুস্তাহাব। [প্রমাণঃ আহসানুল ফাতাওয়া ২:৯, আপকে মাসাইল আওর উনকা হল, ২:২৭, রদ্দুল মুহতার ১:১১৯]
لو تكرر الوضوء في مجلس واحد مرارا لم يستحب بل يكره لما فيه من الاسراف . (رد المحتار:1/191
الوضوء إذا لم يؤد به عمل مما هو المقصود من شرعيته كالصلوات وسجدة التلاوة ومس المصحف ينبغي ان لايشرع تكراره قربة لكونه غير مقصود لذاته فيكون اسرافا محضا. (رد الحتار:1/119
অনিচ্ছাকৃতভাবে হাঁটুর উপরে লুঙ্গি উঠে গেলে উযু ভেঙ্গে যাবে কি-না?
জবাবঃ
এতে ফরয তরক হবে। অবশ্য অনিচ্ছাকৃত হলে গুনাহ হবে না। তবে কোন অবস্থায় এতে উযু ভাঙ্গবে না। কারণ উযু ভাঙ্গার নির্দিষ্ট কিছু কারণ আছে। যেমন শরীর থেকে নাপাক বের হওয়া বা ঘুমানো ইত্যাদি। সতর খুলে যাওয়া উযু ভঙ্গের কারণের মধ্যে পড়ে না।
[ফাতওয়ায়ে দারুল উলূম ১:৩৫
জিজ্ঞাসাঃ
একজনের উযুর পানির ছিটা অন্য জনের গায়ে পড়লে, যার গায়ে পড়ে তার উযু কি ভঙ্গ হয়ে যাবে?
জবাবঃ
উযুর ব্যবহৃত পানি যদিও অন্যকে পাক করতে পারে না, কিন্তু নিজে পাক। সুতরাং তা অন্যের গায়ে লাগলে, তাতে শরীর নাপাক হওয়া বা উযু ভেঙ্গে যাওয়ার কোন কারণ নেই। উযুকারীর শরীরে বাহ্যিক নাপাকী থাকার কারণে উযুর পানি নাপাক হলেও যার গায়ে ছিটা লাগে, তার উযু ভাঙ্গবে না। বরং শুধু নাপাক ছিটার জায়গা পাক করে নিলেই চলবে। [প্রমাণঃ কানযুল উম্মাল, ১:১৭]
জিজ্ঞাসাঃ
উযু থাকা অবস্থায় যদি সন্তানকে দুধ পান করানো হয়, তাহলে উক্ত উযু দ্বারা নামায আদায় কিংবা কুরআন তিলাওয়াত জায়িয হবে কি-না?
জবাবঃ
সন্তানকে দুধপান করানো দ্বারা উযু ভঙ্গ হয় না। সুতরাং সন্তানকে দুধপান করানোর পরও উক্ত উযুতে নামায আদায় করা ও কুরআন তিলাওয়াত জায়িয হবে। [ফাতওয়া দারুল উলূম ৫:৪০৮]
জিজ্ঞাসাঃ
জনৈক ব্যক্তির প্রস্রাবের বাস্তায় অনেক সময় তরল জাতীয় একপ্রকার পদার্থ জমা থাকে। হাত দ্বারা চাপ দিলে তা বের হয়। এতে উযু ও নামাযের কোন ক্ষতি হবে কি? তেমনিভাবে এমতাবস্থায় ইমামতি করা যাবে কি-না?
জবাবঃ
যদি কারো পরিপূর্ণ বিশ্বাস থাকে এবং বাস্তবেও এই হয় যে, এ তরল পদার্থ প্রস্রাবের রাস্তার ভিতরে রয়েছে এবং চাপ না দিলে বাইরে বের হয় না, তাহলে এক্ষেত্রে করণীয় হল কুলুখ নিয়ে পর্দা সহকারে ৮/১০ কদম হাটাহাটি করবে বা কাশি দিবে। এতেই যা বের হয় পানি দিয়ে ধুয়ে নিবে। এরপরও যদি পেশাবের কোন অংশ ভিতরে জমা থাকে, আর তা না বের হয় তাহলে এর দ্বারা উযু ভাঙ্গবে না। এবং নামায ও ইমামতির কোন ক্ষতি হবে না। কোনক্রমেই উক্ত বিশেষ অঙ্গকে টানাটানি করা বাঞ্ছনীয় নয়। আর শরী‘আতে এর নির্দেশও দেয়া হয়নি। তাছাড়া এরূপ করার পরিণতিতে উক্ত অঙ্গ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং এর ফলে নানারকম যৌনরোগ দেখা দিতে পারে তবে অন্ডকোষ ও পায়খানার রাস্তার মাঝামাঝি প্রস্রাবের নালীতে হালকা চাপ দিলে প্রস্রাব পরিষ্কার হয়ে বের হয়। এ জন্য কাশির প্রয়োজন হয় না । এবং ডাক্তারী মতেও কোন সমস্যা হয় না।
ولو نزل البول الى قصبة الذكر لم ينقض الوضوؤ ولو خرج الى القلفة نقض الوضوءـ كذا في الذخيرة. (الفتاوى الهندية:1/9
জিজ্ঞাসাঃ নখপালিশ ব্যবহার করলে উযু হবে কি-না?
জবাবঃ
উযুর মধ্যে যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধোয়া ফরজ, তার একচুল পরিমাণ জায়গা শুকনা থেকে গেলে বা সেখানে পানি না পৌছলে উযু হবে না। নখপালিশ লাগানোর কারণে নখে পানি পৌছে না। অথচ নখে পানি পৌছানো ফরজ। তাই নখপালিশ লাগালে উযু ও ফরজ গোসল কিছুই হবে না । বরং, সে নাপাক থেকে যাবে এবং তার নামায, কুরআন তিলাওয়াত কিছুই জায়িয হবে না, বরং হারাম হবে।[প্রমাণঃ আহসানুল ফাতাওয়া, ২:২৭]
ذكر الخلاف في شرح المنية في العجين واستظهر المنع لان فيه لزوجة صلابة تمنع نفوذ الماء. (رد المختار:1/143
কোন মন্তব্য নেই